মোঃ জাহিদুল ইসলাম,জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি:
২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
দেশের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল জয়পুরহাট সুগার মিলস্ লিমিটেডে শুরু ৬৩ তম (২০২৫–২০২৬) আখ মাড়াই মৌসুম।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে মিলের জচিক কেইন কেরিয়ার প্রাঙ্গণে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মান নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসা সহায়তা) এনডিসি মাকসুরা নূর। উদ্বোধন উপলক্ষে মিল চত্বরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাষ্ট্রায়ত্ত কর্পোরেশন) এম. এ. কামাল বিল্লাহ। সভায় সভাপতিত্ব করেন জয়পুরহাট সুগার মিলস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ খবির উদ্দিন মোল্যা।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জয়পুরহাট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক উত্তম কুমার রায়, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ফজলুর রহমান, সেক্রেটারি গোলাম কিবরিয়া, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মমতাজ উদ্দিন মণ্ডল, আখচাষি প্রতিনিধি, চিনি ব্যবসায়ী, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক প্রতিনিধি এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে বক্তব্য রাখেন জচিক শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ চিনিশিল্প কর্পোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক মো. জায়েদ হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব মাকসুরা নূর বলেন,
রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলো দেশের কৃষি ও শিল্পখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আখচাষিদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে চিনিকলগুলোকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
বিশেষ অতিথি এম. এ. কামাল বিল্লাহ বলেন,
সময়মতো আখ সংগ্রহ ও মাড়াই, উৎপাদন ব্যয় কমানো এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জয়পুরহাট সুগার মিলসকে আরও এগিয়ে নিতে সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ খবির উদ্দিন মোল্যা জানান, চলতি মৌসুম সফল করতে মিল কর্তৃপক্ষ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তিনি আখচাষি, শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশা প্রকাশ করেন।
চলতি ২০২৫–২০২৬ আখ মাড়াই মৌসুমে জয়পুরহাট জেলায় ৩ হাজার ২ শত একর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। এসব জমি থেকে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন আখ সংগ্রহ করে ২ হাজার ৯৭০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মিল কর্তৃপক্ষ।
এবার আখচাষিদের জন্য আখের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। মিল গেটে প্রতি কুইন্টাল আখের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২৫ টাকা, আর বাইরের কেন্দ্রগুলো থেকে প্রতি কুইন্টাল ৬১৫ টাকা দরে আখ ক্রয় করা হবে। পাশাপাশি আখচাষিদের দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে মূল্য পরিশোধে বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ প্রদান করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠান শেষে মিলের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. আমিনুল ইসলাম দোয়া পরিচালনা করেন। দোয়ায় মিলের উন্নয়ন, নিরাপদ উৎপাদন, আখচাষি ও শ্রমিকদের কল্যাণ এবং দেশের শিল্পখাতের সার্বিক অগ্রগতি কামনা করা হয়।

Post a Comment