রতন রায়,স্টাফ রিপোর্টার কুড়িগ্রাম,
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের গাড়িচালক জাহিদ আহমেদ (৪২) আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তার ভাড়া বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার ঋণের বোঝা তাকে এই মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে।
জাহিদ আহমেদ রংপুর জেলার কাউনিয়া থানার মোহাম্মদ আলী শহীদের ছেলে। নাগেশ্বরীতে স্ত্রী ও ছয় বছরের কন্যাসহ শামসুল হক ব্যাপারীর বাড়িতে দুই বছর ধরে ভাড়া থাকতেন তিনি। আত্মহত্যার সময় তার স্ত্রী মেয়েকে নিয়ে স্কুলে ছিলেন। বাড়ি ফিরে স্বামীর মৃতদেহ দেখে স্ত্রী ও শিশুকন্যা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে জাহিদ নিয়মিত ডিউটি করতে স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১২টার দিকে কাজ শেষে বাড়ি ফিরে নিজ কক্ষের ভেতর দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে আত্মীয়-স্বজন দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকলে তার মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
জাহিদের আত্মীয়রা জানান, ঋণের চাপে তিনি গত কয়েক মাস ধরে হতাশায় ভুগছিলেন। প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা ঋণ থাকায় কীভাবে তা শোধ করবেন, তা নিয়ে তিনি চরম উদ্বেগে ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে মানসিকভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করলেও, শেষ রক্ষা হয়নি।
নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা সংবাদমাধ্যমকে জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কোনো অপরাধমূলক ঘটনার প্রমাণ না মিললেও, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সহকর্মী ও স্থানীয়রা জাহিদকে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার আকস্মিক মৃত্যু এলাকায় শোকের ছায়া ফেলেছে। অনেকেই মনে করছেন, আর্থিক সঙ্কট ও মানসিক চাপই তাকে এই পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে।
সমাজকর্মীরা বলছেন, ঋণ, বেকারত্ব বা সামাজিক চাপে হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের প্রতি পরিবার ও সমাজের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। মানসিক স্বাস্থ্য সেবা ও কাউন্সেলিং সুবিধা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে, যাতে এমন করুণ পরিণতি রোধ করা যায়।

Post a Comment